ইরানের রাজধানী তেহরানে সুপ্রিম কোর্ট সদর দপ্তরের কাছে এক বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত দুই বিচারক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। ফার্স নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে এক বন্দুকধারী বিচারকদের ওপর গুলি চালান। নিহত দুই বিচারক হলেন আলি রাজিনি ও মুহাম্মদ মোগিসে।
ইরানের বিচার বিভাগের সংবাদমাধ্যম মিজানের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, একজন বন্দুকধারী সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই বিচারক নিহত হন। এ সময় আদালতের একজন নিরাপত্তা কর্মী আহত হন। বন্দুকধারী পালানোর সময় আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে মিজান।
বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে জানান, হামলাকারী একটি হ্যান্ডগান নিয়ে আদালতে প্রবেশ করে গুলি চালায়।
এই হামলার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে অনেকে মনে করছেন, ১৯৮০ ও ১৯৯০–এর দশকে ইসলামি শাসনের বিরোধীদের দমন এবং হত্যার সঙ্গে এই দুই বিচারকের সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাঁদের ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, এই ঘটনাকে পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছে বিচার বিভাগের মিডিয়া অফিস।
বিচার বিভাগ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলাকারীর সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন কোনো মামলার সম্পর্ক ছিল না। এই ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিহত বিচারকদের মধ্যে আলী রাজিনি ইরানের অন্যতম শীর্ষ বিচারক ছিলেন। ১৯৯৮ সালেও তাঁকে একবার হত্যার চেষ্টা করা হয়।
অপর বিচারক মোহাম্মদ মোঘিসে ছিলেন রেভোলিউশনারি কোর্টের বিচারক। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ওই সময় মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ তাঁকে ‘অসংখ্য অন্যায় বিচারের তদারকির’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে। মোঘিসেকে ২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে কানাডা সরকারও তাঁকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।